দুপুরে খেতে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। ওয়েটারকে জিজ্ঞাসা করলাম "কি আছে?"
সে শুরু করলো কাচ্চি, তেহেরী, বিরিয়ানি দিয়ে। আমি তাকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম "ভাতের সাথে কি আছে বলেন?" সে এবার ২য় দফায় শুরু করলো গরু, খাসি, মুরগী দিয়ে। শেষ করলো ইলিশ, মাগুর, মলা মাছে গিয়ে।
হোটেলে খেতে গেলে কখনো আমি মাছ মাংস কিছু খাই না। হোটেলের খাবার মানেই মরা ধরা পচা সব কিছুর সমাহার। একমাত্র ভর্তা ভাজিটাই মোটামুটি নিরাপদ।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম "ভর্তা ভাজি নাই?" সাথে সাথে দেখলাম তার চেহারায় সব উৎসাহ হারিয়ে গেলো। সে বুঝে নিয়েছে, আমি গরিব কাস্টমার।
তারে টিপস দিতে পারব না। সে অন্যদিকে ফিরে কোনরকম বললো "আছে"! আমি বললাম "আলুভর্তা,ডাল,বেগুন ভাজি আর করল্লা ভাজি আনেন!" অর্ডার দিয়ে ৫ মিনিট বসে রইলাম। এরপর খাবার আসলো। গরিব কাস্টমার নিয়ে তার এতো মাথা ব্যাথা নাই। এর মধ্যে গ্লাস দুয়ে পানি আনার জন্য ডাকতে লাগলাম। তার খবর নাই। মনে হয় কাছে গিয়ে রিকুয়েষ্ট করতে হবে। এরপর মর্জি হলে আনবে। আমার খাওয়া শেষ হয়ে গেল। এরপর সে পানি আনলো।
আমি হাত ধুয়ে বিল দিতে গেলাম কাউন্টারে। অন্য কাস্টমারের বেলায় সে সাথে এসে কাউন্টারে বিল বলে দিচ্ছে, আর কাষ্টমারের পেছনে দাড়িয়ে থাকছে। কাষ্টমার পেছনে ঘুরেই তাকে দেখে টিপস দিচ্ছে। আমার বেলায় সে আসলো না। দূর থেকে বিল বললো। এসব আলুভর্তা, ডালের কাস্টমার সে গুনায় ধরে না।
আমি তাকে ডাকলাম৷ হাতে ১০০ টাকা দিয়ে বললাম "আলুভর্তা ডাল খেলাম বলে পাত্তা দিলেন না।" সে লজ্জায় নিয়ে একটা হাসি দিয়ে, 'না না স্যার 'বলে পারলে মাথা নুয়ে মাটিতে ঢুকিয়ে দিবে অবস্থা!
এরপর আমি বললাম "১০ টাকা রেখে ৯০ টাকা দেন।" তার মুখের মানচিত্র আবার বদলে গেল।
আমারে তুই পানি দিতে গিয়ে ঘুরাইলি, আমি তর ইমোশন নিয়ে খেললাম। হিসাব কাটাকাটি।